শ্রীলংকাতে এই মুহুর্তে মজার ঘটনা ঘটতেছে ।
তাদের সরকার সকল প্রকার রাসায়নিক সার, কীটনাশক আমদানি বন্ধ করার ঘোষনা দিয়েছে ।
চিন্তা করেন, আপনি ধান লাগিয়েছেন, এই সিজনে আমন ধান লাগানর পরে আপনার বিঘা প্রতি ২০/২৫ কেজি ইইউরিয়া না দিলে আপনার অর্ধমৃত জমিতে ধানের ফলন অর্ধেক হয়ে যাবে ।
যদি এমন হয় যে, এই ধান থেকে পাওয়া চাল দিয়ে আপনার পরিবারের আগামী ৬ মাসের ভাত আসার কথা, তাহলে আপনি বিপদে পড়ে গেছেন । কারন, আপনার ফলন অর্ধেক হবে, বাজারে ধান চালের দাম দ্বিগুন বা ২.৫ গুন বেড়ে যাবে ।
রাসায়নিক সার যদি না আসে, প্রায় সকল ফসলই ফলন কমে যাবে । কারন বর্তমানে প্রায় সকল সবজি হাইব্রিড জাতের । চাইলেই কেউ বাজারে ন্যাটিভ জাতের কোন বিজ পাবে না ।
এই ঘোষনা আসার সাথে সাথে চিনির দাম কেজি এখন ২০০/কেজি রুপি হয়ে গেছে ।
এ থেকে কি কি ঘটতে পারে ?
প্রায় সকল জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, এর সাথে গত এক বছরে শ্রীলংকার রুপি দাম ৭ গুন কমে গেছে ডলারের বিপরিতে । সামনে তাদের দেশে দুর্ভিক্ষের কাছাকাছি অবস্থা হতে যাচ্ছে ।
এমন কিছু কি এর আগে কখনও ঘটেছিল ?
এর আগেও একবার কিউবাতে এমন ঘটনা ঘটেছিল । সোভিয়েত রাশিয়া মদদপুস্ট চারিদিকে আমেরিকার কোলের মাঝে থাকা কিউবার কৃষি সারের জন্য পুরোপুরি রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল ছিল ।
ঘাড়ত্যাড়া ছাত্রদলের হাতে আ-ফগানে মার খেয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার পর হুট করেই রাশিয়া কিউবাকে সার দিতে অপারগতা প্রকাশ করে । আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা থাকায় অন্য দেশগুলো থেকেও কিউবা সার কিনতে পারেনি । সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসাবে তারা গরিব ছিল । তাদের ফসল উতপাদন কমে অর্ধেক হয়ে যায় ।
জনপ্রতি ৩২০০ কিলোক্যালরি এর বদলে তারা ২১০০কিক্যাঃ খাবার খেতে বাধ্য হয় । তাদের সুবিধা ছিল – তারা সুপ্রীম লিডার যা বলে তা শুনতে অভ্যস্ত, বাধ্য ছিল । তাদের সমাজে এটা জনগনের মাঝে সহজ ছিল যে, সরকার যা বলে তার বাইরে কিছু করার চিন্তাই করা যায় না ।
কিউবান সরকার বিশ্বঃ এর সাথে বসে সমস্যার সমাধান খুজে বের করে । তারা সারাদেশে অর্গানিক কৃষিতে চলে যায় । মেশিনারিজ বাদ দিয়ে, তারা গরু দিয়ে হাল চাষ, শহরের সকল পতিত জমিতে তাদের দেশীয় সবজি চাষ করে যেখানে রাসায়নিক সার লাগত না । রাসায়নিক সার না দেওয়ায় সেখানে কীটনাশক কম আসত । এভাবে সারা দেশে অর্গানিক ফসল উতপাদনের রীতি চালু হয় ।
শ্রীলংকা গণতান্ত্রিক দেশ – সরকার যা বলবে, নির্বাচনে জেতার জন্য বিরোধীদল সকল সময় তার বিরোধীতা করবে এটাই আমাদের উপমহাদেশ এর চিত্র । এই জরুরি অবস্থায় তারা কিউবা_ন দের মত একাগ্রতার সাথে কাজ করতে পারবে এমন আশা করা যায় না ।
অথচ তারা খাদ্য আমদানি করবে এমন সক্ষমতা তাদের নাই, মাঝে যে খাবার উতপাদন ভয়ানকভাবে ব্যাহত হবে – সেটা ঠেকানর সাধ্যও নাই রাসায়নিক কৃষিতে থাকার কারনে ।
শ্রীলংকার শান্তিপ্রিয় গরিব মানুষদের জন্য সমবেদনা !
রাজনিতির কারনে কত মানুশই না এখন কস্ট পাবে ।
“হিন্দু না ওরা মুসলিম এই জিজ্ঞাসে কোন জন হে,
কাণ্ডারি বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র”
0 Comments