নরওয়েতে পড়াশোণা করে আমেরিকায় গিয়েছিলেন,
সেখান থেকে দক্ষিণ সুদানে ফিরে কৃষি কাজ করাটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে ?
২৮ বছর বয়সি তরুনি জয় লুডা আমেরিকাতে ছিলেন । জন্মসুত্রে দক্ষিন সুদানি হলেও বড় হয়েছেন কেনিয়াতে । সেখান থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েশন করতে গিয়েছিলেন নরওয়েতে স্কলারশিপ পেয়ে । সেখান থেকে আরেক স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকায় যান । আমেরিকায় ছিলেন ৮ বছর সব মিলিয়ে । এরপরে কেনিয়াতে না ফিরে, ফিরে আসেন দক্ষিন সুদান এ এবং ২০ একর কৃষি জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন । বেশিরভাগ জমিতে ঢেঁড়স, বেগুন, ক্যাপসিকাম চাষ করছেন এখন ।
গত ৫ বছরে, ব্যাক টু রুট স্লোগানে আফ্রিকাতে প্রচুর মানুস ফিরে আসছেন যারা এতদিন বিদেশে ছিলেন । এর মাঝে আমেরিকান, জ্যামাইকান, কানাডাতে থাকা আফ্রিকানদের সংখ্যা বেশি ।
যারা ফিরে আসছেন তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ব্যাবসা, কৃষি ফার্ম, ট্রাভেল এজেন্সি এসব নিয়ে কাজ করছেন ।
তারিক বিন জিয়াদ যখন আন্দালুসিয়া জয় করেন এরপরে আন্দালুসিয়া, গ্রানাডার উন্নতি শুরু হয় । একই সময়ে ইউরোপ ছিল অন্ধকারে । ইউরোপিয়ান রেনেসাঁর শুরুটা গ্রানাডার কারনে । সে সময়ে ইউরোপিয়ানরা পড়াশোণা করতে এখানে আসত । পড়াশোনা শেষ করে তারা ইউরোপে ফিরে গিয়ে মুসলিমদের কাছে অর্জন করা জ্ঞান কাজে লাগানো শুরু করে ।
পরের ৫০০ বছরে তারা দুনিয়া জয় করে নেয় ।
একই সময়ে দাস ব্যাবসার কারনে আফ্রিকানদের আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয় । তারা চিনি উতপাদন, তুলা উতপাদনে অমানুশিক অত্যাচার সহ্য করে টিকে থাকে ।
যোগ্যরাই টিকে থাকে – এই তত্ত্ব অনুসারে এখন আফ্রিকান আমেরিকান যারা আছে তারা শারিরিকভাবে, মেধার দিক দিয়ে অনেক ভাল অবস্থায় আছে ।
দুনিয়ায় সবচেয়ে সেরা দৌড়বিদ প্রায় সবাই জ্যামাইকান, আমেরিকান । সেরা মুষ্টিযোদ্ধা ? আফ্রিকান আমেরিকানরা ।
গত ৫০০ বছরে কালোরা যে জ্ঞান, শক্তি অর্জন করেছে সেটা একদিন না একদিন আফ্রিকার কাজে লাগবে । আর এটার শুরুই হল -ব্যাক টু রুট আন্দোলন । ২০১৯ সালে ইয়ার অফ রিটার্ন ট্রেন্ড শুরু হয় । প্রচুর আফ্রিকান আমেরিকান পশ্চিম আফ্রিকার ঘানা, নাইজেরিয়া, আইভরি কোস্ট, সেনেগাল এ ফিরে আসে । ইউরোপে থেকে প্রচুর আফ্রিকান পুর্ব আফ্রিকায় ফিরে আসে – উগান্ডা, তাঞ্জানিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডাতে
এই যে জ্ঞান এবং সম্পদ আর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে আসা এটা কেমন ভূমিকা রাখতে পারে ভবিষ্যতে ?
পুর্ব আফ্রিকার আর পশ্চিম আফ্রিকার গড়ে কমপক্ষে ৬০% এরও বেশি মানুশ ২০ বছর এর নিচে বয়স । এরা পরিশ্রমী, এদের চাহিদা অনেক বেশি । শুধু সুযোগ দরকার এদের কাজ করার । এই সুযোগটাই ফিরে আসা আফ্রিকানরা তৈরি করছে ।
২০১৪/২০১৬ তে উগান্ডা স্টার্টাপ বিজনেস এ দুনিয়াতে ১ নাম্বারে ছিল । এছাড়াও, আফ্রিকাতে আছে প্রচুর অনাবাদি জমি যা উর্বর । দিন দিন অর্গানিক খাবারের চাহিদা সারা দুনিয়াতেই বাড়ছে ।
আমেরিকা, কানাডা উন্নত হতে পারে – তবে সেখানে প্রায় সব খাবার প্রসেস করা, এবং জিএমও ফুড ।
অর্গানিক চাষাবাদের জন্য আফ্রিকার জমি সেরা কারন সেখানে এখন পর্যন্ত কোন সার, কীটনাশক পড়ে নাই । এক দক্ষিণ সুদানের নীল নদে যে পরিমান মাছ আছে তা দিয়ে পুরো ইউরোপের মাছের চাহিদা পূরন করা সম্ভব ।
সামনে আফ্রিকার সুদিন ।
আর আমাদের দেশের অতি ঘন জনবসতি আর জন শক্তিকে কাজে লাগানর জন্য আফ্রিকা কি আমাদের কাজে লাগতে পারে ?
আফ্রিকানরা চাষাবাদ ভাল জানে না, আমরা খুব ভাল জানি – আমাদের চাষিরা শিক্ষায় আগাতে না পারলেও, ইউরোপে গিয়ে দক্ষ শ্রমিক হিসাবে কাজে লাগতে না পারলেও –
আফ্রিকায় গিয়ে কৃষি কাজে দক্ষতা দেখাতেই পারে ।