একটি প্রজাপতি যখন জন্ম নেয়,
এর আগে তাকে বাদামের খোসার মত একটি আবরনের মাঝে থাকতে হয় ।
এটিকে কাইটিনের আবরন বলে ।
ম্যাচিউরড হবার আগে, সে এই কাইটিনের আবরনে নিজের পাখা দিয়ে, ক্রমাগতভাবে গুঁতোতে থাকে ।
সারা রাত এভাবে গুঁতোনর পরে, এক সময় সে এটা ভেঙ্গে ফেলে এবং বের হয়ে এসে ওড়া শুরু করে ।
এইভাবে একটি প্রজাপতি যখন কাইটিন ভাঙ্গার সংগ্রাম করতে থাকে, তখন কোন এক দয়ালু ব্যাক্তির যদি মনে দয়ার উদ্রেক হয় –
আহা ! বেচারা প্রজাপতি !!
আমি একটু একে সাহায্য করি । এর আবরন ব্লেড দিয়ে কেটে দেই ।
ফলাফল কি হতে পারে এতে করে ?
প্রজাপতি যখন এইভাবে কাইটিন ভাঙ্গার চেস্টা করে -এই চেস্টার মাঝেই সে ওড়ার মত সক্ষমতাও অর্জন করে ।
আল্লাহ তাকে সে পর্যন্ত কাইটিন ছেড়ার অনুমতি দেন না, যে পর্যন্ত না সে ওড়ার ক্ষমতা অর্জন করে । এবং উড়ে উড়ে খাবার সংগ্রহ করাতে পারে ।
দয়ালু ব্যাক্তি, সংগ্রামরত প্রজাপতিকে সাহায্য করতে গিয়ে আসলে মেরেই ফেলে ।
আল্লাহ মানুশকে এজন্য সমস্যা দেন, যেন সে সেই বাধাকে অতিক্রম করার শক্তি অর্জন করে – এরপরে উড়তে পারে ।
এবং আরো সফল হয় ।
বড় সফলতার জন্য বড় বাধা আসে ।
বাধা মানেই সামনে বড় সাফল্য, সৃষ্টি কর্তার রহমতের দরজা ।
*** *** *** ***
যেকোন ব্যাবসা, উদ্যোগ এর শুরুতে অনেক বাধা আসে । শুরুর বাধা গুলো সমাধান করতে পারলে বাকি কাজ সহজ হয়ে যায় ।
অনিক ভাই চা বাগান করেছিলেন এমন যায়গায়, যেখানে তিনি কাউকেই চেনেন না, এমনকি উনার বাগানের ১ কিলো যায়গার দূরত্বেও কেউ বসবাস করত না । ৫০০ গজ দূরেই ইন্ডিয়ান বর্ডার এর বেড়া ।
উনার শুরুটা ছিল পেয়ারা বাগান দিয়ে । সাথে টমেটো, মরিচ আর অন্য সব সবজিও করেছেন । ফসল নিয়ে যখন পঞ্চগড়ে পাইকারি বাজারে গিয়েছেন, দেখা গিয়েছে সেদিনই ঠাকুরগাও থেকে একই ফসল এসেছে । দাম পান নাই সবজির ।
দমে যান নাই এতে করে ।
পেয়ারা বাগানের এলাকার বাচ্চারা প্রায়ই পেয়ারা চুরি করতে আসত । পঞ্চগড়ের ৪/৫ ডিগ্রী শীতেও রাতের বেলায় বড় টর্চ লাইট নিয়ে রাতের বেলা টহল দিয়েছেন ।
সবজিতে তেমন লাভ না আসায় – আর যথেস্ট যায়গা থাকায় দেশি মুরগি পালা শুরু করলেন, বাড়তে বাড়তে তা ৭০০+ হয়ে গেল ,
সাথে কবুতর বাড়তে থাকল খুব দ্রুত , সবজি তে লাভ না হলেও প্রতি মাসে মুরগি, কবুতর বিক্রি করেই উনার মাসিক খরচের অনেকটা চলে আসল ।
অপেক্ষায় ছিলেন পেয়ারার পুরো সিজনের । ২ বছর পরে যখন, পেয়ারা গাছ বড় হল, সেগুলো মরে যাওয়া শুরু করল । অনেক বড় লস ছিল এটা । এই ধাক্কা সামাল দেয়া গেল উনার গরু থেকে আসা লাভ দিয়ে ।
এই বাধা গুলো উনাকে অন্য আরেক উপায় করার রাস্তা দেখিয়ে গেল ।
৫৩ টা গরু ৪ টা মহিষ ছিল । এর গরুর দুধ বিক্রি করে যা সৎ সেটা দিয়ে বাকি ফসল চাষ করার খরচ উঠে আসত ।
এটাও গেল ২০১৩ এর দেশে যে জ্বালাও পোড়াও শুরু হল এতে । গরুও লসে যাওয়া শুরু করলো । সব গরু বিক্রি করে দিলেন ।
আরেক ধাক্কা, এটা উনাকে বিকল্প চিন্তা করতে বাধ্য করছে ।
প্রচুর পড়াশোনা করতেন ।
এই সময়ে চা বাগান করার আইডিয়া পেলেন, এবং উনার সবচে বড় প্লট ৮ একরে চা গাছ লাগিয়ে দিলেন ।
১৮ মাস পর চা থেকে লাভ আসা শুরু করলো, সুবিধা ছিল চা গাছ গরু ছাগলে খায় না – চুরিও হয় না ।
এভাবে ট্রায়াল এন্ড ইরর বা ট্রাবল শ্যূট যাই বলা হোক – উনি উনার সমাধান খুজে বের করেছেন ।
এভাবে যখনই কোন সমস্যা এসেছে, বাধা এসেছে সেটার সমাধান খুজে বের করেছেন । নিজেকে আরো শক্তিশালি করেছেন, এই সমস্যা গুলো উনার কাজে স্থায়িত্ব নিয়ে এসেছে ।